স্টাফ রিপোর্টার, কুমিল্লা:
কুমিল্লা জেলার মুরাদনগর উপজেলার একটি গ্রামে ঘটেছে এক হৃদয়বিদারক ঘটনা। গুড়া পুটি মাছ কাটাকে কেন্দ্র করে স্বামীর হাতে খুন হয়েছেন স্ত্রী। ঘটনার পর পরই স্বামী নিজেই থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেছেন। এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, একটি তুচ্ছ বিষয়—গুড়া পুটি মাছ—থেকে শুরু হওয়া বাকবিতণ্ডা পরিণত হয় ভয়াবহ এক হত্যাকাণ্ডে।
নিহত গৃহবধূ ঘরের কাজ সেরে স্বামীকে খাবার পরিবেশন করছিলেন। মাছ কাটাকে কেন্দ্র করে দু’জনের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময় হয়। এক পর্যায়ে রাগের মাথায় স্বামী স্ত্রীকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন। ঘটনাস্থলেই স্ত্রী মারা যান।
দৃষ্টিকটুভাবে, যেই জায়গায় মাছ কাটার কথা ছিল, সেখানেই পড়ে ছিল স্ত্রীর নিথর দেহ। মাছের পরিবর্তে পড়ে আছে লাশ—এই দৃশ্য চোখে জল এনে দিয়েছে প্রতিবেশীদের। এলাকাবাসী জানান, “সে এখন যতই কান্নাকাটি করুক, তার আবেগে আর কিছুই ফেরত আসবে না। যে মানুষটি এই ঘর-সংসার গুছিয়ে রাখতো, সে আর ফিরবে না।”
ঘটনার পর পরই ঘাতক স্বামী স্থানীয় থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। তিনি পুলিশের কাছে স্বীকার করেছেন যে রাগের বশে এমন কাণ্ড করে ফেলেছেন এবং এখন বুঝতে পারছেন স্ত্রীর গুরুত্ব। কিন্তু এখন আর সেই উপলব্ধির কোন মূল্য নেই।
স্থানীয় এক মুরুব্বি বলেন, “এই ঘটনা আমাদের সবার জন্য এক কঠিন শিক্ষা—রাগ কখনোই ভালো সিদ্ধান্ত এনে দেয় না। রেগে গেলে হেরে যেতে হয়।”
এলাকাবাসী দ্রুত তদন্তের দাবি জানিয়েছে এবং খুনের সুষ্ঠু বিচার প্রত্যাশা করছে। ইতোমধ্যে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে এবং স্বামীকে আটক রাখা হয়েছে।
ঘটনার পেছনে পারিবারিক কলহ ছাড়াও অন্য কোন কারণ আছে কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তদন্ত কর্মকর্তারা।
একটি পুটি মাছ, একটি রাগ, একটি ভুল সিদ্ধান্ত—এর মাশুল একটি জীবন। যে ঘর আগলে রাখতেন স্ত্রী, সেই ঘর আজ নিস্তব্ধ। সমাজে এধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে, তার জন্য পরিবার ও সমাজকে হতে হবে আরও সচেতন ও সহনশীল।