দেশ রূপান্তর
নতুন দুই উপদেষ্টা নিয়ে দৈনিক দেশ রূপান্তরের প্রথম পাতার খবর ‘দুই উপদেষ্টা নিয়ে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা’। প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন তিন উপদেষ্টা রবিবার সন্ধ্যায় শপথ নেওয়ার পর দুই উপদেষ্টার পূর্ববর্তী সময়ে তাদের বিতর্কিত কর্মকা- ঘিরে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। এ উপদেষ্টাদের নিয়ে সন্তুষ্ট নন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক ও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরাও।
ওই রাতেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে তারা বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। তাছাড়া গতকাল সোমবার বিকেলে একই দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ এ সময় বলেছেন, ধানমন্ডি ৩২-কে যারা কাফেলা মনে করে, তাদের উপদেষ্টা নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন রবিবার সন্ধ্যায় বঙ্গভবনের দরবার হলে শপথ পড়ান নতুন নিয়োগপ্রাপ্ত তিন উপদেষ্টাকে। তারা হলেন-ব্যবসায়ী সেখ বশির উদ্দিন, চলচ্চিত্র পরিচালক মোস্তফা সরয়ার ফারুকী ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মাহফুজ আলম। তাদের মধ্যে ফারুকী ও সেখ বশিরকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
রবিবার রাত থেকেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিভিন্ন নেতার সঙ্গে নতুন উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর ঘনিষ্ঠতার নানা ছবি ও লেখা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হতে শুরু করে। ফারুকী বিভিন্ন সময় তার লেখায় ও ফেসবুক পোস্টে শেখ মুজিবুর রহমান, শেখ ফজিলাতুন নেছা মুজিব ও শেখ হাসিনার প্রশংসা করেছেন। শুধু তিনি নন, তার স্ত্রী অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশাও আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে বিভিন্ন সময় নানা সুবিধা গ্রহণ করেছেন।
শেখ হাসিনার লেখা ‘শেখ ফজিলাতুন নেছা-আমার মা’ শিরোনামে লেখার প্রশংসা করে একটি রিভিউ পোস্ট করেছিলেন ফারুকী। সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, ‘ইতিহাস বেশির ভাগ সময় বিজয়ী এবং পুরুষের চোখেই লেখা হয়। শেখ হাসিনার এই লেখাটায় একটা ভিন্ন জানালা দিয়ে আমাদের ইতিহাসটাকে দেখার চেষ্টা করা হয়েছে। খুবই ইন্টারেস্টিং পার্সপেক্টিভ। পড়তে পড়তে অনেক জায়গায় আমার নিজের মাকে দেখতে পেয়েছি, নানাকে দেখতে পেয়েছি, মায়ের সংগ্রাম দেখতে পেয়েছি, বাবাকে দেখতে পেয়েছি।’
এ ছাড়া ৭ আগস্ট নিজের ভেরিফাইড ফেসবুক পোস্টে উপদেষ্টা ফারুকী লিখেছিলেন, ‘আমি মনে করি, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর একটা জরুরি কাজ হবে ৩২ নম্বরের বাড়ির সংস্কারকাজ শুরু করা। এই বাড়িকে আগের চেহারায় ফিরিয়ে নিয়ে আসা এবং এ বাড়ি সম্পর্কিত বিভিন্ন ছবি, স্মৃতিস্মারক যা যা পাওয়া যায় তা দিয়ে যাদুঘর আবার চালু করা এবং অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান প্রফেসর ইউনূসের উচিত হবে নিজেই বাড়িটা ভিজিট করা।’
সমালোচনা থেকে বাদ যাননি ব্যবসায়ী সেখ বশির উদ্দিনও। তিনি আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি আফিল উদ্দিনের ভাই হিসেবে শিক্ষার্থীদের কাছে সমালোচিত হয়েছেন। আফিল উদ্দিন ২০০৯ সাল থেকে টানা চারবার আওয়ামী লীগের এমপি হিসেবে জয়ী হয়েছেন।
এ ছাড়া উত্তরবঙ্গ তথা রংপুর ও রাজশাহীর ১৬ জেলা থেকে কোনো উপদেষ্টাদের নিয়োগ না দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন উত্তরবঙ্গের শিক্ষার্থীরা। শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সংবলিত দরবার হলে নতুন উপদেষ্টাদের শপথ পাঠ নিয়েও সমালোচনা শুরু হয়। যদিও পরে সেখানে থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি অপসারণ করা হয়।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও সরব হন অনেকে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সারজিস আলম ফেসবুক স্ট্যাটাসে লেখেন, ‘শুধু ১টা বিভাগ থেকে ১৩ জন উপদেষ্টা! অথচ উত্তরবঙ্গের রংপুর, রাজশাহী বিভাগের ১৬টা জেলা থেকে কোনো উপদেষ্টা নাই! তার ওপর খুান হাসিনার তেলবাজরাও উপদেষ্টা হচ্ছে!’ সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসউদ বলেন, ‘যে স্বপ্ন ধারণ করে হাজারো শহীদ জীবন বিলিয়ে দিয়েছে, তাদের দেওয়া আমাদের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে যে কারও বিরোধিতা করতে আমি দ্বিধা করব না, বরং এই বিরোধিতা ন্যায্য এবং দায়িত্বও বটে। স্বপ্ন বাস্তবায়নে প্রয়োজনে আরেকবার লড়াই হবে, জীবনবাজি রাখা হবে।’ আব্দুল কাদের লেখেন, ‘অথচ কথা ছিল, ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার পূর্ণ বিলোপ; কিন্তু কী হচ্ছে? কারা এসব করাচ্ছে? আপনাদের উদ্দেশ্য কী?’ দ্বিতীয় বিপ্লবের কথা তুলে ধরে রিফাত রশিদ বলেন, ‘সেকেন্ড রেভল্যুশন, নতুন সংবিধান, সেকেন্ড রিপাবলিক, বিপ্লবীদের নিয়ে গঠিত রাষ্ট্র…।’ সমন্বয়ক রেজওয়ান আহমেদ রিফাত লেখেন, ‘বিপ্লবী সরকার গঠনে বাধা দিচ্ছে কারা? ছাত্রদের উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ এ বাধা কারা? আমরা জুলাই এর পক্ষে আবার লড়াই করতে প্রস্তুত।’
প্রথম আলো
দৈনিক প্রথম আলোর প্রধান শিরোনাম মিটার বাণিজ্যে সাবেক মন্ত্রীর ‘ভাই–বন্ধু’ চক্র। প্রতিবেদনে বলা হয়, বিদ্যুৎ খাতে সাড়ে চার কোটির বেশি গ্রাহককে প্রিপেইড মিটার দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছিল গত আওয়ামী লীগ সরকার। একে একে ছয়টি বিতরণ সংস্থা মিটার আমদানি করতে থাকে। এ নিয়ে কয়েক হাজার কোটি টাকা বাণিজ্যের সুযোগ তৈরি হয়। আর এ বাণিজ্যের পুরোটার নিয়ন্ত্রণ নেয় সাবেক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদের ‘ভাই-বন্ধু’ চক্র।
ছয়টির মধ্যে চারটি বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থার প্রিপেইড মিটার কেনার তথ্য সংগ্রহ করেছে প্রথম আলো। সংস্থাগুলোর দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও মিটার আমদানির সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা বলছেন, কিছু মিটার কেনা হয়েছে সরাসরি ক্রয়পদ্ধতি অনুসরণ করে। আর কিছু কেনা হয়েছে উন্মুক্ত দরপত্র ডেকে। তবে অভিযোগ আছে, সাবেক বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী তাঁর বারিধারার বাসায় বসে ঠিকাদার চূড়ান্ত করে দিতেন। এরপর দরপত্র ডেকে কাজ দেওয়া হতো ওই ঠিকাদারের কোম্পানিকে।
প্রিপেইড মিটার স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয় ২০১০ সালে। মিটার সরবরাহ বাড়তে থাকে ২০২০ সালের পর। চীনের তিনটি কোম্পানি সেনজেন স্টার, হেক্সিং ও ওয়াসিয়ন গ্রুপ একটি চক্রে যুক্ত হয়ে সব মিটার সরবরাহ করে। মিটার–বাণিজ্যের নামে টাকা পাচারেরও অভিযোগ আছে এ চক্রের বিরুদ্ধে। যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের নিবন্ধন পরিদপ্তর থেকে মিটার সরবরাহে যুক্ত একাধিক স্থানীয় কোম্পানির তথ্য সংগ্রহ করেছে প্রথম আলো। এসব কোম্পানিতে প্রতিমন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের যোগসূত্র খুঁজে পাওয়া গেছে।
আগের কোনো অভিজ্ঞতা ছাড়াই ২০১৯ সালে নেসকোতে মিটার সরবরাহের কাজ পায় ‘অকুলিন টেক’ নামের একটি কোম্পানি। চীনের সেনজেন স্টারের সঙ্গে যৌথভাবে ১০৭ কোটি টাকার এই কাজ পায় তারা। এরপর ২০২১ সালে তারা আবার নেসকোতে পায় প্রায় ৯২ কোটি টাকার কাজ। আর নেসকোতে কাজের অভিজ্ঞতা সনদ নিয়ে সবচেয়ে বড় বিতরণ সংস্থা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডে (আরইবি) মিটার সরবরাহের কাজ নেয় অকুলিন। এখানে আরও বড় বাণিজ্য করে তারা।
নেসকোর একটি দায়িত্বশীল সূত্র বলছে, তাদের কাজ দিতে তৎকালীন বিদ্যুৎসচিব আহমদ কায়কাউস চাপ প্রয়োগ করেন নেসকোর বোর্ডকে। কায়কাউস পরে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন, দায়িত্ব পান মুখ্য সচিবের। বর্তমানে তিনি দেশের বাইরে আছেন। তাঁর সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রিপেইড মিটার কেনার ক্ষেত্রে চক্রের কথা জানি। বিভিন্ন অভিযোগে প্রিপেইড মিটারে এডিবি (এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক) একপর্যায়ে অর্থায়নও বন্ধ করে দিয়েছিল।’ তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নেওয়া প্রিপেইড মিটারের প্রকল্পগুলো যাচাই–বাছাই করা হচ্ছে। আর কোনো চক্র তৈরির সুযোগ দেওয়া হবে না।
যুগান্তর
‘বাজার থেকে উধাও হচ্ছে সয়াবিন তেল’-এটি দৈনিক যুগান্তরের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, রোজা যত ঘনিয়ে আসছে, ভোজ্যতেলের বাজারে অসাধু চক্রের কারসাজি তত বাড়ছে। কোমর বেঁধে সক্রিয় হচ্ছে সেই পুরোনো সিন্ডিকেট। পরিস্থিতি এমন-রোজা শুরুর চার মাস আগেই কোম্পানিগুলো মিল পর্যায় থেকে তেলের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছে। ডিলারের কাছে সরবরাহ কমিয়েছে। এতে ডিলার থেকে খুচরা বাজারে সরবরাহ কমিয়ে বাড়ানো হচ্ছে দাম।
তবে বাড়তি দামেও চাহিদামতো তেল পাচ্ছেন না খুচরা বিক্রেতারা। এতে বাজার থেকে এক প্রকার উধাও হচ্ছে সয়াবিন তেল। তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় সাধারণ ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে খোলাবাজারে। সোমবার রাজধানীর বেশকয়েকটি বাজার ঘুরে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
এদিকে তেলের দাম সহনীয় রাখতে ১৭ অক্টোবর পাম ও সয়াবিন তেলের মূল্য সংযোজন কর ১৫ শতাংশ কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়েছে। এছাড়া উৎপাদন ও ব্যবসা পর্যায়ে সয়াবিন ও পাম তেলের মূল্য সংযোজন কর অব্যাহতি দেওয়া হয়। ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই সুবিধা কার্যকর থাকবে। তবে মাসের ব্যবধানে লিটারে ২০ টাকা বেড়ে খোলা সয়াবিন খুচরা বাজারে ১৮৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর লিটারে ৩ টাকা বেড়ে বোতলজাত বিক্রি হচ্ছে ১৬৭-১৭০ টাকা। সঙ্গে ১৫ দিনের ব্যবধানে পাম তেল ও রাইসব্রান তেলের দামও লিটারে ৬ থেকে ২০ টাকা বেশিতে বিক্রি হচ্ছে। এতে আসন্ন রোজায় বাজার আরও অস্থির হওয়ার আশঙ্কা করছেন ভোক্তারা। তারা বলছেন, প্রতিবছরের মতো এবারও রমজানে বাড়তি দরেই ভোজ্যতেল কিনতে হবে।
সোমবার নয়াবাজারের মুদি বিক্রেতা মো. তুহিন বলেন, ১৫ দিন আগেও পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন তেল ৭৯০-৮০০ টাকা দিয়ে কিনে খুচরা পর্যায়ে ৮১৮ টাকায় বিক্রি করতাম। এখন পাওয়া যাচ্ছে না। ডিলাররা অল্প পরিমাণে সরবরাহ করছেন। তাই ডিলাররা সংকট দেখিয়ে আজও (সোমবার) ৮১০ টাকা দিয়ে বিক্রি করেছে। তবে সরকার নির্ধারিত পণ্যের গায়ের লিখিত খুচরা মূল্য ৮১৮ টাকায় বিক্রি করতে হচ্ছে। এছাড়া এক লিটারের বোতলজাত তেলেও একই অবস্থা। এক লিটারের বোতলজাত সয়বিন তেল ১৬৭-১৭০ টাকা খুচরা মূল্যে বিক্রি করতে হচ্ছে। এ তেল ডিলারদের কাছ থেকে ১৬২ টাকা দিয়ে কিনতাম। এখন ১৬৫ টাকা দিয়ে কিনতে হচ্ছে। রূপচাঁদা, তীর, বসুন্ধরা, ফ্রেশসহ সব কোম্পানি একই রেট ধরে দিচ্ছে।
কালের কণ্ঠ
দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রথম পাতার খবর ‘দলগুলোর মধ্যে মতভেদ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে’। খবরে বলা হয়, বাংলাদেশে গত কয়েক সপ্তাহে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ কিছু বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দাবি এবং সরকারের ভূমিকা ও কিছু সিদ্ধান্তের পক্ষে-বিপক্ষে দলগুলো অবস্থান নেওয়ায় এই মতভেদ তৈরি হয়েছে।
মাসখানেকের ঘটনাপ্রবাহ বিশ্লেষণে দেখা গেছে, সংসদ নির্বাচন, সংবিধান বাতিল, রাষ্ট্র সংস্কার, রাষ্ট্রপতির অপসারণ, আওয়ামী লীগসহ কয়েকটি রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ—মোটা দাগে এই কয়টি বিষয় নিয়ে দলগুলোর মধ্যে বেশ মতবিরোধ কাজ করছে।
কয়েকটি বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর মতের বেশ অমিল দেখা যাচ্ছে। ফলে দলগুলোর সঙ্গে সরকারের প্রতি আস্থার ঘাটতি তৈরি হয়েছে। সর্বশেষ গত রবিবার যে তিনজন নতুন উপদেষ্টা শপথ নিলেন, তাঁদের মধ্যে দুজনের বিষয়ে বেশির ভাগ রাজনৈতিক দলের আপত্তি রয়েছে। এ বিষয়টিতে সরকারের সঙ্গে দলগুলোর বড় ধরনের মতবিরোধ তৈরি করেছে বলে অনেকে মনে করছেন।
তিন উপদেষ্টার শপথ গ্রহণ নিয়ে বেশির ভাগ দল এখনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া না জানালেও গণ অধিকার পরিষদ গতকাল বিক্ষোভ করেছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ কয়েকটি ছাত্রসংগঠনও প্রতিবাদ জানিয়েছে। অনেকে বলছেন, উপদেষ্টা নিয়োগ নিয়ে এবার সরকার বড় ধরনের সমালোচনার মুখে পড়ল। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সমর্থন দিয়ে আসছে রাজনৈতিক দল, নাগরিক সমাজসহ বিভিন্ন মহল। তবে অভ্যুত্থানের তিন মাসে এসে তাঁদের নানা সিদ্ধান্ত ও বক্তব্য নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
সমকাল
হেফাজতকে ‘পেতে চায়’ বিএনপি-জামায়াত-এটি দৈনিক সমকালের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে মামলা আর নিপীড়নের গ্যাঁড়াকলে পড়ে এক পর্যায়ে চুপসে গিয়েছিল আলোচিত ধর্মভিত্তিক অরাজনৈতিক সংগঠন হেফাজতে ইসলাম। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ও অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা নেওয়ার পর আবারও মাঠে সক্রিয় সংগঠনটি। নানা ইস্যুতে তারা পালন করছে বিভিন্ন কর্মসূচি। সারাদেশে সংগঠনটির বিপুল সংখ্যক কর্মী-সমর্থক থাকায় মাঠ পর্যায়ে দাপট দেখানোর পাশাপাশি বড় ভোট ব্যাংকও আছে তাদের। ফলে বিএনপি, জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল হেফাজতের মন জয়ে এক ধরনের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। সূত্র বলছে, বিএনপি ও জামায়াতের সঙ্গে হেফাজতের অনানুষ্ঠানিক আলাপ-আলোচনা চলছে।
রাজধানীর শাপলা চত্বরের সেই ঘটনা এখনও তাড়া করে ফেরে হেফাজতে ইসলামকে। এ ছাড়া বিভিন্ন সময়ে নেতাকর্মীর নামে মামলা, ধরপাকড়সহ নির্যাতনের বিষয়টি ভুলতে পারছে না সংগঠনটি। হেফাজত নেতারা বলছেন, যেসব রাজনৈতিক দল তাদের ১৩ দফা দাবিকে গুরুত্ব দেবে, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে করা মামলা প্রত্যাহারসহ বিভিন্ন দাবি-দাওয়া মেনে নেবে এবং ইসলামবিরোধী অবস্থান নেবে না বলে অঙ্গীকার করবে– শুধু তাদের পক্ষেই সমর্থন থাকবে।
২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বর ও আশপাশের এলাকায় হেফাজতে ইসলামের তাণ্ডব চালানোর অভিযোগে রাজধানীতে ৫৪টিসহ সারাদেশে ৮৩ মামলা হয়। এসব মামলায় ৩ হাজার ৪১৬ জনের নাম ছাড়াও অজ্ঞাতপরিচয়সহ ৮৪ হাজার ৯৭৬ জনকে আসামি করা হয়। ওই ঘটনায় বিভিন্ন সময়ে নাশকতা, ভাঙচুর, অবরোধ ও দাঙ্গার অভিযোগে হেফাজত কর্মীদের নামে ২০৩ মামলা হয়।
হেফাজতের একটি সূত্র জানায়, আপাতত বিভিন্ন ইস্যুতে নানা কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে সংগঠনের নেতাকর্মীকে চাঙ্গা রাখার পাশাপাশি শক্তি দেখানোর কৌশল নিয়ে মাঠে থাকবে তারা। রাজনৈতিক দল না হলেও দেশে একটি ‘ফ্যাক্টর’ হিসেবে আবির্ভূত হতে চায় সংগঠনটি।
এদিকে, অন্তর্বর্তী সরকার আসার পর বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের মামলা প্রত্যাহার করে নেওয়া হচ্ছে।
তবে হেফাজত নেতাকর্মীর নামে থাকা মামলা প্রত্যাহারে কোনো উদ্যোগ নেই। এ নিয়ে হেফাজতে রয়েছে অসন্তোষ। পরিস্থিতি বুঝে এই বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর চাপ তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে তাদের।
ইত্তেফাক
দৈনিক ইত্তেফাকের প্রধান শিরোনাম ‘শিশুর কাঁধে বইয়ের বোঝা!’। প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রথম শ্রেণিতে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) নির্ধারিত পাঠ্যবই আটটি। কিন্তু অধিকাংশ নামিদামি স্কুলে প্রথম শ্রেণির শিশুদের পড়ানো হয় আরো দুই থেকে পাঁচটি বই বেশি। অতিরিক্ত বই, ক্লাসের খাতা, স্কেল বাক্স, পানির বোতল, টিফিন বক্স—সব মিলিয়ে স্কুল ব্যাগের ভার বইতে বইতে ছাত্রছাত্রীরা সত্যিই ক্লান্ত। দিনের পর দিন ছোট ছোট বাচ্চার পিঠে এই স্কুল ব্যাগের বোঝা ক্রমশই যেন বেড়ে চলেছে। রাজধানীর একটি সচরাচর দৃশ্য, ব্যাগের ভারে কুঁজো হয়ে হাঁটছে শিশু, নয়তো ছেলেমেয়ের ভারী ব্যাগ কাঁধে নিয়ে ঘাম মুছতে মুছতে চলেছেন তাদের মা-বাবা কিংবা অভিভাবক।
বিভিন্ন নামি স্কুলের প্রথম শ্রেণির শিশুর ব্যাগের ওজন তিন কেজির বেশি। আবার ইংলিশ ভার্শনে প্রথম শ্রেণির শিক্ষার্থীর ব্যাগের ওজন গড়ে চার কেজির বেশি। পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীর ব্যাগের ওজন পাঁচ কেজির বেশি। এক্ষেত্রে আট বছরেও বাস্তবায়ন হয়নি উচ্চ আদালতের নির্দেশনা। ফলে শিশুর শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে বিশেষজ্ঞরা জানান। একটি শিশুর ওজনের ১০ শতাংশের বেশি তার স্কুল ব্যাগের ওজন হবে না। এটা হাইকোর্টের আদেশ। এজন্য আইন-বিধিমালা প্রণয়নে আদালতের নির্দেশনা আছে। কিন্তু তার পরও স্কুল ব্যাগের ওজন থেকে রেহাই পাচ্ছে না শিশুরা।
অনেক ক্ষেত্রে শিশুদের স্কুল ব্যাগের ওজন তার শরীরের ওজনের শতকরা ৩০ ভাগেরও বেশি। হাইকোর্টের বিচারপতি মঈনুল ইসলাম চৌধুরী ও আশিস রঞ্জন স্কুল ব্যাগ নিয়ে এই রায় দেন ২০১৬ সালের ১৭ ডিসেম্বর। এ রায়ের পর আইন না করা এবং নির্দেশনা না মানায় সংশ্লিষ্টরা একটি আদালত অবমাননা আবেদনও করেছিলেন। সেটি এখনো শুনানির অপেক্ষায় আছে।
শিশুদের জন্য প্রথম শ্রেণিতে এনসিটিবির পাঠক্রম অনুযায়ী নির্ধারিত পাঠ্যবই হলো— ইংরেজি, বাংলা, প্রাথমিক গণিত, পরিবেশ পরিচিতি সমাজ ও বিজ্ঞান, সংগীত, শারীরিক শিক্ষা, চারু ও কারুকলা এবং ধর্ম। তবে মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজে প্রথম শ্রেণির শিশুদের পড়ানো হয় অতিরিক্ত আরো দুটি বই। রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুলে প্রথম শ্রেণির শিশুদের পড়ানো হয় অতিরিক্ত চারটি বই। এর মধ্যে বাংলা বিষয়ে দুটি ও ইংরেজির দুটি। অতিরিক্ত চারটি বই ও স্কুল কর্তৃপক্ষের নির্ধারিত খাতা, কলম, স্কেল বক্স, পানির বোতল—সব মিলিয়ে ব্যাগের ওজন তিন কেজির বেশি।
শুধু প্রথম শ্রেণি নয়, বিভিন্ন শ্রেণিতে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) নির্ধারিত পাঠ্যবইয়ের বাইরে অতিরিক্ত বই রয়েছে। পঞ্চম শ্রেণিতে অতিরিক্ত পাঁচটি বই পড়ানো হয়। উইলস লিটল ফ্লাওয়ার স্কুলেও পড়ানো হয় অতিরিক্ত বই। শুধু এ তিনটা স্কুল নয়, ঢাকা ও বিভাগীয় শহরের বেশির ভাগ স্কুলেই বাড়তি বই পড়তে বাধ্য করা হয় শিক্ষার্থীদের। যদিও আইনে এটি নিষিদ্ধ। তার পরও বছরের পর বছর ধরে শিশুদের অতিরিক্ত বই পড়তে বাধ্য করা হচ্ছে। রাজধানীর কয়েকটি স্কুলে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শ্রেণিভেদে দুই থেকে পাঁচটি অতিরিক্ত বই পড়ানো হয়।
নয়া দিগন্ত
‘৫ আগস্ট দেশ থেকে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে’-এটা দৈনিক নয়া দিগন্তের প্রথম পাতার খবর। প্রতিবেদনে বলা হয়, ৫ আগস্টেও দেশ থেকে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন নব নিযুক্ত বাণিজ্য উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন।
তিনি বলেছেন, বিগত সরকারের সময় ব্যাংক থেকে টাকা পাচার তো হয়েছেই, এরপর ৫ আগস্ট এই এক দিনেই ব্যাংকগুলো থেকে মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার তুলে নিয়ে পাচার করা হয়েছে। অন্য দিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, বিগত ১৫ বছরের ব্যাংকিং খাত থেকে লাখ কোটি টাকা লুটপাট হয়েছে। কিন্তু এরপরও আমরা চেষ্টা করছি কোনো ব্যাংক যাতে বন্ধ না হয়ে যায়। কোনো ব্যাংক বন্ধও হবে না।
গতকাল রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে আয়োজিত ‘তৃতীয় বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্মেলন-২০২৪’ অনুষ্ঠানে তারা এসব কথা বলেন। দৈনিক বণিক বার্তা এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সেখ বশির উদ্দিন আরো বলেন, দুই হাজার প্রাণের বিনিময়ে আমরা যে স্বাধীনতা পেয়েছি, সেটিকে ব্যর্থ হতে দেয়া যাবে না।
তিনি বলেন, আমরা ব্যবসায়ের রাজনীতিকরণ যেভাবে করেছি, তাতে মাঝে মাঝে ব্যবসায়ী পরিচয় দিতে লজ্জা হয়। আমি ব্যবসায়ীদের ব্যবসা পরিচালনার খরচ কমানোর জন্য সামর্থ্যরে সর্বোচ্চ চেষ্টা করব।
অনুষ্ঠানে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ছাত্র-জনতা আমাদের কিছু দায়িত্ব দিয়েছে এবং আমরা সেটা যথাসম্ভব পালন করার চেষ্টা করছি। আমাদের কারো ব্যক্তিগত এজেন্ডা নেই; আমাদের একমাত্র এজেন্ডা হচ্ছে দেশের স্বার্থ।
তিনি আরো বলেন, যা কিছু করা হচ্ছে, তা দেশের স্বার্থেই করা হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে যেকোনো সরকার এসে সেই কাজগুলো চালিয়ে নিতে পারবে। আমরা কাজগুলো তিনটি ধাপে ভাগ করেছি স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি কাজ। আমরা হয়তো মধ্যমেয়াদি কাজ শুরু করতে পারব, কিন্তু দীর্ঘমেয়াদি কাজগুলো পরবর্তী রাজনৈতিক সরকারগুলো করবে।
বণিক বার্তা
দৈনিক বণিক বার্তার প্রধান শিরোনাম ‘গণতান্ত্রিক অর্থনীতিই বৈষম্য ও অপরাধ নিরাময় করতে পারে’। খবরে বলা হয়, অর্থনীতি ও রাজনীতিতে গত দেড় দশকে ব্যাপক দুর্বৃত্তায়ন হয়েছে। নীতিনির্ধারণ ও প্রণয়নে লুটেরা গোষ্ঠীকে দেয়া হয়েছে অগ্রাধিকার। রাজনীতির পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্যও আবর্তিত হয়েছে ক্ষমতার বলয়কে ঘিরে। এতে দেশের মানুষের মধ্যে সম্পদ ও ধনবৈষম্য তীব্র থেকে তীব্রতর হয়েছে। বিশ্বের সবচেয়ে ব্যয়বহুল শহরগুলোয় সম্পদ পাচারকারীরা যখন শান-শওকতে জীবনযাপন করছে, ঠিক তখনই জীবন-জীবিকার ন্যূনতম প্রয়োজনগুলো পূরণ করতে নিরন্তর সংগ্রাম করছে কোটি বাংলাদেশী।
অর্থনীতিতে যে বৈষম্য ও আর্থিক অপরাধের প্রবণতা তৈরি হয়েছে, সেগুলোকে দূর করতে প্রয়োজন গণতান্ত্রিক অর্থনীতি। যেখানে উদ্যোক্তা, শ্রমিক, ভোক্তা, সরবরাহকারী ও বৃহত্তর জনসাধারণের নিজ নিজ স্বার্থ সংরক্ষণের নিশ্চয়তা থাকবে। সিদ্ধান্ত গ্রহণে সব অংশীজনের অধিকার হবে সর্বজনীন। শাসনক্ষমতার কেন্দ্রে থাকা ব্যক্তি তথা রাজনীতিবিদদের অবশ্যই সৎ হতে হবে। অসৎ রাজনীতিবিদ দিয়ে কখনই সততার অর্থনীতি বিনির্মাণ সম্ভব নয়।
বণিক বার্তা আয়োজিত ‘তৃতীয় বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্মেলন ২০২৪’-এ গতকাল বিশেষজ্ঞ অর্থনীতিবিদ, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, ব্যাংকারসহ বিশিষ্টজনদের আলোচনায় এমন বক্তব্য উঠে আসে। রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁওয়ের গ্র্যান্ড বলরুমে এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১০টায় শুরু হওয়া এ সম্মেলন শেষ হয় বেলা ২টায়। এবারের আয়োজনের বিষয় ছিল ‘বৈষম্য, আর্থিক অপরাধ ও বাংলাদেশের অর্থনীতির নিরাময়’।
বণিক বার্তা সম্পাদক দেওয়ান হানিফ মাহমুদের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত অর্থনৈতিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। অনুষ্ঠানে অন্তর্বর্তী সরকারের বাণিজ্য, পাট ও বস্ত্রবিষয়ক উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দিন, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান, সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান ও এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর হোয়ে ইউন জিয়ং বক্তব্য রাখেন।
আজকের পত্রিকা
‘৪ সংকটে শিল্পোৎপাদন’-এটি দৈনিক আজকের পত্রিকা প্রধান শিরোনাম। প্রতিবেদনে বলা হয়, ডলার-সংকটে শিল্পের কাঁচামাল আমদানি ব্যাহত হচ্ছিল আগে থেকেই। ছিল বিদ্যুৎ ও জ্বালানির সমস্যাও। জুলাই অভ্যুত্থানের পর পরিবর্তিত রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে যুক্ত হয়েছে নতুন সমস্যা—ব্যাংকঋণের সুদহার বৃদ্ধি ও শ্রমিক অসন্তোষ। সব মিলিয়ে চতুর্মুখী সংকটে পড়েছে দেশের উৎপাদন খাত। এতে ব্যাহত হচ্ছে উৎপাদন, বাড়ছে বন্ধ কারখানার সংখ্যাও। শিল্পমালিকদের আশঙ্কা, এই সংকট দীর্ঘায়িত হলে তা রপ্তানি খাতে যেমন নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে, তেমনি বাড়াবে বেকারত্বের হার।
বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রিজের (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ) বলেন, জ্বালানি সংকট, ব্যাংকঋণের সুদহার বৃদ্ধি, শ্রমিক অসন্তোষে কারখানা বন্ধ হওয়া এবং এনবিআর কর্তৃক এইচএস কোড জটিলতাসহ নানা কারণে শিল্প উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। উৎপাদন ব্যাহত হলে তার প্রভাব অন্যান্য খাতেও পড়ে। বিশেষ করে সেবা খাত ও কৃষি খাতে সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়ে।
দেশের রপ্তানি আয়ের বেশির ভাগই আসে তৈরি পোশাক থেকে। সম্প্রতি শ্রমিক অসন্তোষ বেড়েছে খাতটিতে। গাজীপুর, আশুলিয়া, নারায়ণগঞ্জসহ শিল্প-অধ্যুষিত বিভিন্ন এলাকায় কোনো না কোনো কারখানায় ঘটছে শ্রমিকদের বিক্ষোভ। শ্রমিক অসন্তোষে গতকাল সোমবার পর্যন্ত পোশাক খাতের ৩৩-৩৫টি কারখানা বন্ধ ছিল বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ) সূত্রে জানা যায়, চলতি মাসের শুরুতেও দেশে তৈরি পোশাক খাতে ১৬টি কারখানা বন্ধ বা ছুটি ঘোষণা করে উৎপাদন বন্ধ রেখেছিল। সর্বশেষ গতকাল পর্যন্ত এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৩টিতে। এর মধ্যে ৩২টি কারখানাই গাজীপুর ও ময়মনসিংহ এলাকায় অবস্থিত।
ডেইলি স্টার
দ্য ডেইলি স্টারের প্রথম পাতার খবর ‘Govt must stop giving key posts to AL loyalists’ অর্থাৎ ‘আওয়ামী লীগের অনুগতদের গুরুত্বপূর্ণ পদ দেয়া বন্ধ করতে হবে’।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা গতকাল সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন, যারা ‘ফ্যাসিবাদীদের মিত্র’ বলে মনে করেন, তাদের উপদেষ্টার পদ থেকে সরিয়ে দিতে হবে।
সরকার আওয়ামী শরিকদের পুনর্বাসন অব্যাহত রাখলে তারা রাজপথে নেমে পুরো উপদেষ্টা পরিষদকে সরিয়ে দিতেও দ্বিধা করবেন না বলেও হুঁশিয়ারি দেন তারা।
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, যাদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে তাদের অবদানের ব্যাখ্যা উপদেষ্টা পরিষদকে দিতে হবে। গত ১৬ বছরে তাদের সংগ্রাম সম্পর্কে আমরা জানতে চাই।’