মনোহরগঞ্জ প্রতিনিধিঃ মনোহরগঞ্জে বিগত ১৬ ষোল বছর ধরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলামের ভাতিজা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম। চাচা মন্ত্রী হওয়ায় উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় জমি দখল, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ মানুষদেরকে তুলে নিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়াসহ সম্পদের পাহাড় গড়তে বেপরোয়া হয়ে উঠে আমির। প্রতিটি ইউপি চেয়ারম্যান কাছ থেকে মাসিক দু’-তিন লক্ষ টাকা করে চাঁদা আদায় করত।
গত ইউপি নির্বাচনে বিনা ভোটে নির্বাচিত করার প্রতিশ্রæতি দিয়ে উপজেলার ৩৩টি ওয়ার্ডে প্রার্থীদের কাছ থেকে জনপ্রতি পাঁচ লক্ষ টাকা করে মোট ১৬ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা এবং ১১জন চেয়ারম্যানের কাছ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা করে মোট ১৬ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা, সর্বমোট ৩৩ কোটি টাকা চাঁদা আদায় করে তাজু মন্ত্রীর ভাতিজা আমির।
এলজিইডি’র প্রতিটি কাজে ১০% হারে কোটি কোটি চাঁদা নিতো ওই আমির। বর্তমানে তার নামে যমুনা ব্যাংক, আইএফআইসি ব্যাংকসহ অন্যান্য ব্যাংকে শত শত কোটি টাকার ডিপোজিট রয়েছে।
মনোহরগঞ্জ, ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানে তার নামে রয়েছে বিপুল পরিমান সম্পত্তি। মনোহরগঞ্জে পোমগাঁও, নোয়াপাড়া, লাউহরি, যাদবপুর, চাটনী কেশতলা, ঝলম ও জলিপুরে তার ও তার মায়ের নামে বিপুল পরিমাণ সম্পত্তি হাতান সে।
জলিপুর গ্রামে ৪২ শতক সম্পত্তির ৫ তলা ফাউন্ডেশন বিশিষ্ট ভবনের ১ম তলায় মার্কেট ও দ্বিতীয় তলায় বাসা ভাড়া দেয়াসহ পোমগাঁও ছিনার বাড়ির সামনে ২তলা ভবন নির্মাণ করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে ফ্যাসিস্ট সরকারের ওই দালাল।
এছাড়া সে নোয়াপাড়া গ্রামে কয়েক কোটি টাকা খরচে একটি বøক ইটের ফ্যাক্টরী নির্মাণ করে। মনোহরগঞ্জ-লাকসাম রোডে হাটিরপাড় গ্রামে প্রায় ৮০ শতক সম্পত্তির উপর পেট্টল পাম্প ও গ্যাস পাম্প স্থাপন করে।
এভাবেই ত্রাস সৃষ্টির মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে জিম্মি করে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলে আমির।
যার দূর্নীতির ফিরিস্তি শেষ হবার নয়, ইতিপূর্বে সে তার চাচা তাজু মন্ত্রীকে দিয়ে পোমগাঁও-জলিপুর স্ট্রিল ব্রিজ ভেঙ্গে নতুন করে একটি সুউচ্চ ব্রিজের আংশিক নির্মাণ সম্পন্ন করে। উক্ত ব্রিজটি সুউচ্চ হওয়ার কারণে ব্রিজের উত্তর-দক্ষিণ পার্শ্বে শত শত পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে এবং দক্ষিণ পাড়ে আমিরের ৪২ শতক জায়গার মধ্যে নির্মিত মার্কেট রক্ষার জন্য ব্রিজটি বাঁকা করে পুর্বদিকে ব্রিজটি মুখপাত রাখে।
শুধুমাত্র ওই মার্কেটটি রক্ষা করার জন্যই পূর্বদিক থেকে রাস্তা নেয়ার যত অপচেষ্টা করে তারা। এরজন্য ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে রাস্তার জন্য পূর্বদিকের জায়গাগুলো সরকারিভাবে এ্যকোয়ার করে নেয় সে। এতে সবচেয়ে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয় জলিপুরবাসী।
কোন ক্ষতিপূরণ না দিয়েই এই জায়গাগুলো খেয়ালখুশি মতে এ্যকোয়ার করে নেয় চাচা-ভাতিজা। ব্রিজের পুর্ব-পশ্চিম পাশ দিয়ে রাস্তা নেয়ার এবং উক্ত অবৈধ এ্যকোয়ার বাতিলের দাবী এলাকাবাসীর। এছাড়া আমির অবৈধ সম্পত্তি ক্রোক করার ও ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের ক্ষতিপূরণের জন্য আরো দাবী জানান এলাকাবাসী।
জলিপুর গ্রামের ভূক্তভোগী মোঃ আলমগীর হোসেন জানান,
তাজু মন্ত্রীর ভাতিজা আমির তার দু’শতক জায়গার উপর নির্মিত চারতলা বিল্ডিং ভেঙ্গে জবর-দখল করে নিজের নামে মার্কেট নির্মান করে। এতে কোটি টাকার ক্ষতির শিকার হন বলে জানান আলমগীর।