আবু ইউসুফ মনোহরগঞ্জ কুমিল্লা: কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলার লাকসাম মনোহরগঞ্জ সড়কের মনোহরগঞ্জ থেকে আশিরপাড় বাজার পর্যন্ত সড়কের বেহাল অবস্থা। উপজেলার কয়েক হাজার মানুষের চলাচলের অন্যতম সড়ক। ২০২৪ সালের স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার পর সংস্কার না হওয়ায় ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। খানাখন্দ ও বড় বড় গর্ত হয়ে সড়কটি যেন মরন ফাঁদে পরিণত হয়েছে। ঝুঁকি নিয়েই চলাচল করছে যানবাহন ও স্থানীয়রা। এতে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।উপজেলা প্রকৌশলী বলছেন খুব দ্রুতই সমস্যার সমাধান করা হবে।
উপজেলার প্রধান সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন মনোহরগঞ্জের কয়েক হাজার মানুষ লাকসাম হয়ে বিভিন্ন স্থানে যাতায়াত করে থাকেন। প্রতিদিন এই সড়কে দিয়ে চলাচল করছে কয়েক হাজার ছোট বড় যানবাহন।
সরেজমিনে দেখা যায়, মনোহরগঞ্জ বাজার থেকে আশিরপাড় বাজার পর্যন্ত স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় অসংখ্য গর্ত রয়েছে।
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পরবর্তী সময়ে সড়কটি সংস্কার না করায় সামান্য বৃষ্টিতে গর্তে পানি জমে যায়। সড়কের উপরের পিচ উঠে অনেক জায়গায় জমেছে ১ থেকে ৬ ইঞ্চি পর্যন্ত কাদা ও বালি। এসব জায়গায় ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে যানবাহন ও স্থানীয়রা।
এই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালক মো. রাজু বলেন, ‘রাস্তার যে বেহাল দশা, তাতে চলাচল করা খুবই কষ্ট। দুর্ঘটনার আশংকা নিয়েই গাড়ি নিয়ে বের হতে হয়, গাড়ি না চালালে খাব কী।’
সিএনজি চালক ওমর ফারুক বলেন, ‘মনোহরগঞ্জ থেকে আশিরপাড় বাজার যেতে স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত সময় লাগার কারণে যাত্রীদের কথা শুনতে হয়। তাছাড়া খানাখন্দের কারণে অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে। যাত্রীরাও চরম ভোগান্তির শিকার হয়। আমাদের গাড়ির বেশ ক্ষতি হয়।’
পথচারী ও গাড়িচালকরা জানান, নিম্নমানের কাজ এবং স্মরণকারী ভয়াবহ বন্যায় সড়কের পিচ উঠে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারছে না গাড়িগুলো। শিগগিরই সড়ক মেরামত করা না হলে এ সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যেতে পারে।
অনেকে আক্ষেপ করে বলেন, ‘চারদিকে এত উন্নয়ন তবুও আমাদের এই সড়কটি সংস্কার হয় না। মানুষজন অসুস্থ হলে হাসপাতালেও নেয়া যায় না, আর কবে সংস্কার হবে এই রাস্তা?’
এছাড়া উপজেলার শান্তির বাজার থেকে মুদাফরগঞ্জ পর্যন্ত প্রায় ১৪ কিমি সিএন্ডবি সড়কের অবস্থা আরো ভয়াবহ। লাকসাম ও মনোহরগঞ্জ উপজেলার সীমান্ত দিয়ে যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম এই সড়ক। এছাড়াও সড়কটির কিছু অংশ বরুড়া ও চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলায় পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই সড়কটির প্রায় পুরোটায় অসংখ্য গর্ত ও খানাখন্দে ভরপুর। ফলে এ পথে চলাচলকারীদের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই।সড়কটি দিয়ে চাঁদপুর ও মনোহরগঞ্জের মানুষ ঢাকা, চাঁদপুর, চাটখিল, রামগঞ্জ ও সোনাপুর যাতায়াতের অন্যতম একমাত্র মাধ্যম থাকায় বেশ কয়েকটি কোম্পানির বাস চলাচল করতো, কিন্তু বর্তমানে আয়েশা পাসপোর্ট ছাড়া আর কোন কোম্পানির বাস চলাচল করছে না।
স্থানীয় লোকজনের ভাষ্য, প্রায় এক বছরের বেশি সময় ধরে সড়কটির বিভিন্ন স্থান ভাঙাচোরা। গত বছরের স্মরণ কালের ভয়াবহ বন্যায় লাকসাম -মনোহরগঞ্জসহ আশপাশের কয়েকটি উপজেলা প্লাবিত হয়। বন্যার স্রোত বয়েছে সড়কটির ওপর দিয়ে। বর্তমানে ১৪ কিলোমিটার সড়কের বেশির ভাগ স্থানেই বন্যার স্পষ্ট ক্ষত। দ্রুত এটি সংস্কার না করা হলে যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়তে পারে। এ ছাড়া এসব খানাখন্দ আর গর্তের কারণে প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
সড়কগুলো সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করার জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান ভুক্তভোগী জনসাধারণ।
মনোহরগঞ্জ উপজেলা প্রধান প্রকৌশলী শাহ আলম জানান-সড়কটি বন্যায় ব্যাপক ক্ষয় ক্ষতি হয়েছে, বিষয়টি সমাধান কল্পে আমরা কাজ করছি। আশা করি দ্রুত সময়ের মধ্যে সড়কটি সংস্কারের কাজ শুরু করা হবে।