প্রিন্ট এর তারিখঃ এপ্রিল ২০, ২০২৫, ১০:৩৪ এ.এম || প্রকাশের তারিখঃ ডিসেম্বর ১৭, ২০২৪, ৩:৩৫ এ.এম
একদিন এক স্বপ্ন জেগে উঠেছিল
রক্তাক্ত সূর্যের লালিমায়,
মাটির গভীরে জমে থাকা
শতাব্দীর হাহাকার আর বিদ্রোহের গর্জন।
সেদিন ঢাকার হৃদয় ছিল খালি—
না ছিল পার্কের রঙিন দোলনা,
না ছিল ফুলের বাগানের সুবাস,
ছিল শুধু এক ধু-ধু প্রান্তর,
দিগন্ত জুড়ে বিস্তৃত সবুজ দুর্বার মতন।
সেই প্রান্তরে জড়ো হয়েছিল এক জনসমুদ্র,
কারখানা থেকে ছুটে আসা ক্লান্ত শ্রমিক,
লাঙ্গল ফেলে আসা কৃষকের দল,
অস্ত্র কেড়ে নেওয়া বিদ্রোহী যুবক,
নারী, বৃদ্ধ, ভবঘুরে, আর পিতৃহীন শিশুরা।
তাদের চোখে ছিল এক জ্বলন্ত প্রতিজ্ঞা,
মুঠোয় বাঁধা ছিল স্বাধীনতার অদৃশ্য পতাকা।
সেদিন বাতাসে ভাসছিল প্রতিবাদের গান,
জোয়ারের মতো মানুষের ঢেউ
আছড়ে পড়ছিল ইতিহাসের পৃষ্ঠায়।
তাদের অপেক্ষা ছিল কারও জন্য,
কেউ আসবে—এক মহাকবি,
যার কণ্ঠে থাকবে বজ্রের সুর,
যার ভাষায় ফুটবে মুক্তির ফুল।
অবশেষে তিনি এলেন,
হিমালয়ের মতো দীপ্ত চরণে,
তার কণ্ঠে ছিল আগুনের ঝংকার—
তিনি বললেন:
“এবারের সংগ্রাম আমাদের বাঁচার সংগ্রাম,
এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।”
সেই উচ্চারণে কেঁপে উঠল সবুজ মাঠ,
আকাশ ভরে উঠল বজ্রনিনাদে,
আর ইতিহাসের বুকে লেখা হল
স্বাধীনতার প্রথম কবিতা।
সেই দিন থেকেই 'স্বাধীনতা'
শব্দটি হয়ে উঠল আমাদের।
আজ যখন শিশুপার্কের দোলনায়
হাসি ফোটে নবপ্রজন্মের,
বৃক্ষের ছায়ায় বয়ে যায় শীতল হাওয়া,
তখনও বাতাসে ভেসে আসে সেই ধ্বনি,
সেই প্রথম উচ্চারণ—
স্বাধীনতা, যা রক্তে রচিত,
স্বপ্নে গড়া, প্রাণের দামে কেনা।
শ্রদ্ধেয় কবি নির্মলেন্দু গুণের কবিতা অনুকরণে।