প্রিন্ট এর তারিখঃ এপ্রিল ১৯, ২০২৫, ৯:৫৬ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ ডিসেম্বর ১১, ২০২৪, ২:১৩ পি.এম
দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করুন –ওসমান গনি
বাংলাদেশের চলমান সমস্যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সমস্যা হল দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতি ,যা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সরকার শত চেষ্টা করেও নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন। দেশের সাধারণ মানুষের একটা ধারণা ছিল হয়তো আওয়ামী লীগ সরকার পরিবর্তন হলে দ্রব্যমূল্যের দাম সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে চলে আসবে কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার পতন হয়ে গেল প্রায় দুই মাস অতিবাহিত হলো কিন্তু অন্তবর্তী সরকার দেশের বাজার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি যা নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে একটা হাহাকার ও অস্থিরতার ভাব বিরাজ করছে। খাদ্যসহ সব ধরনের পণ্য ও সেবামূল্য অব্যাহতভাবে বেড়ে চলেছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর উদ্যোগ না থাকায় ব্যবসায়ীরা যেমন খুশি তেমন দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। কোথাও পণ্যমূল্যের সমন্বয় নেই। নিম্ন ও মধ্যবিত্তের জীবনযাপনের টানাপড়েন চরমে পৌঁছেছে। তাদের আয় বাড়েনি, ব্যয় বেড়ে গেছে বহুগুণ। তারা যে ব্যয়ের খাত বাড়িয়েছে, তা নয়, স্বাভাবিক অবস্থায় যে ব্যয়ে জীবনযাপন করত, সেই ব্যয় দিয়ে পণ্য কিনতে পারছে না। খাদ্য, চিকিৎসা, সন্তানের লেখাপড়ার অত্যাবশ্যকীয় ব্যয় ছাড়া অন্যান্য যে ব্যয় তা অনেকে বাদ দিয়েছে। ভ্রমণ, বিনোদন, বিয়ে-সাদীর দাওয়াত ইত্যাদি বর্জনের পাশাপাশি মোবাইল ডাটাসহ কম প্রয়োজনীয় খরচ বাদ দিয়েও জীবনযাপনের টানাপড়েনে কমাতে পারছে না। বিভিন্ন তথ্য-পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সাধারণ মানুষ ভোগের চাহিদা কমাতে বাধ্য হওয়ায়, পুষ্টিহীনতাসহ নানা রোগ-ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে। বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও)-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, প্রতিদিন প্রাপ্ত বয়স্ক একজন মানুষের সুস্থ থাকার জন্য ২-৩ টেবিল চামচ তেল, ২৭০ ৪৫০ গ্রাম চাল, আটা, ৪০০ থেকে ৬০০ গ্রাম মিশ্র শাক-সবজি, ২৫০ থেকে ৩৫০ গ্রাম মাছ, গোশত, ডিম খেতে হয়। বাংলাদেশে নিম্ন আয়ের মানুষ এ খাদ্য গ্রহণ করতে পারছে না। বিবিএস-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের মানুষ এখন দুই ধরনের পুষ্টিহীনতার শিকার হচ্ছে। প্রথমত অভাবজনিত পুষ্টিহীনতা, দ্বিতীয়ত, খাদ্য সংক্রান্ত দীর্ঘমেয়াদি অসংক্রামক রোগজনিত পুষ্টিহীনতা। এর ফলে জন্ম নিচ্ছে খর্বাকৃতির ও কমবুদ্ধিসম্পন্ন শিশু। দুর্বল হয়ে পড়ছে কর্মক্ষম মানুষ। অতি দ্রুত দেশ মানুষের সার্থে দ্রব্যমূল্যে বাজার নিয়ন্ত্রণ করা এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান দায়িত্ব ও কর্তব্য হয়ে পড়ছ। দেশের সংস্কার পরে করতে হবে আগে দেশে বসবাস করা মানুষের বাঁচার সক্ষমতা মানুষের মধ্যে তৈরি করে তুলতে হবে, দেশের মানুষ যদি না বাঁচে তাহলে দেশ দিয়ে কি হবে ? দেশের সুযোগ সুবিধা কে ভোগ করবে তাই একটি দেশের প্রধান মানব সম্পদ সবার আগে রক্ষা করতে হবে। দেশের সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে দেশের প্রতিটি হাটবাজারে অতি দ্রুত তদারকি করে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা করা এখন সময়ের একান্ত প্রয়োজন হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশের সাধারণ মানুষ যদি কম পয়সায় খাওয়া-দাওয়া করে টিকে থাকার মত পরিবেশ পায় এতেই তারা শান্তি।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত