মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে গুলিতে নিহত শাহিদা আক্তার (২২) অন্তঃসত্ত্বার জন্য প্রেমিক তৌহিদ শেখ (২৩)কে বিয়ে করতে চাপ প্রয়োগ করে। এতে ক্ষিপ্ত হয়েই প্রেমিক তৌহিদ শেখ থানা লুট করা অস্ত্র দিয়ে গুলি করে হত্যা করে শাহিদাকে। সংবাদ সম্মেলনে এমন কথা জানান মুন্সীগঞ্জ পুলিশ সুপার মো. শামসুল আলম সরকার।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, তৌহিদ তার পরিবারের লোকজনের সহযোগিতায় সোমবার রাতে ঢাকা থেকে লঞ্চে করে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। ব্যাপক তদন্ত ও তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে আমরা বিষয়টি জানতে পারি। পরবর্তীতে ভোলার ইলিশাঘাট এলাকায় লঞ্চের কেবিনের ভেতরে ঘুমন্ত অবস্থায় তাকে গ্রেপ্তার করে আমাদের গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। এর আগে গত শনিবার দুপুরে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের সমসপুর এলাকার দোগাছি সার্ভিস সড়ক থেকে শাহিদা আক্তারের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। লাশের পাশে কয়েকটি গুলির খোসা পড়ে ছিল। তার শরীরে আটটি গুলির ছিদ্র ছিল।
সেদিন দুপুর ১২টার দিকে লাশ উদ্ধার করে শ্রীনগর থানায় নিয়ে যান আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। সেখান থেকে শাহিদার মুঠোফোনে থাকা নম্বরের মাধ্যমে তার মায়ের নম্বর পাওয়া যায়। বিকালে জরিনা বেগম এসে মেয়ের লাশ শনাক্ত করেন।
এ ঘটনায় শনিবার দিবাগত রাত ১২টার পর নিহত তরুণীর মা জরিনা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করে মামলাটি করেন। পরে রোববার সকালে ওই মামলায় একমাত্র নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয় তৌহিদকে। রোববার রাতে ময়নাতদন্ত শেষে শাহিদার লাশ ময়মনসিংহের বরিবয়ান গ্রামে দাফন করা হয়।
নিহতের মা জরিনা বেগম বলেন, তিন মাস আগে শাহিদা ও তৌহিদ সবার অজান্তে চাঁদপুরে ঘুরতে গিয়েছিল। সেখানে তৌহিদ আমার মেয়েকে মারধর করে। পরে পুলিশ এসে দু’জনকে ধরে নিয়ে যায়। তখন তাদের মধ্যে প্রেমের বিষয়টি আমি জানতে পারি। পরে তৌহিদের বিষয়ে বিভিন্ন জায়গায় খোঁজখবর নিই। জানতে পারি, তৌহিদ মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ছেলে হিসেবেও ভালো না। আমার মেয়েকে ওই ছেলের সঙ্গে মেলামেশা করতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু তৌহিদ বিভিন্ন সময় আমার মেয়েকে ফুসলিয়ে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে যেত। আমার মেয়েটাকে গুলি করে হত্যা করেছে। আমি মেয়ে হত্যার বিচার চাই।
অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি সঠিক কিনা ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে নিশ্চিতভাবে জানার কথা বলেন পুলিশ সুপার। তবে শাহিদা অন্তঃসত্ত্বা ছিল কিনা এমনটা জানে না তার মা জরিনা বেগম।
মুন্সীগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক ইশতিয়াক রাসেল বলেন, আসামি তৌহিদকে আদালতে পাঠানো হয়েছে। সেখানে সে ১৬৪ ধারায় হত্যাকাণ্ডের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়।