1. live@dailytrounkhota.com : news online : news online
  2. info@www.dailytrounkhota.com : দৈনিক তরুণ কথা :
রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ০২:২৮ অপরাহ্ন
সর্বশেষ :
পুটি মাছ কাটা নিয়ে বিবাদ, স্বামীর হাতে প্রাণ গেল স্ত্রীর: এলাকায় শোকের ছায়া মনোহরগঞ্জে যৌথবাহিনীর অভিযানে নারীসহ ৩ মাদক ব্যবসায়ী আটক মনোহরগঞ্জে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ১১টি দোকান ভূষ্মীভূত মনোহরগঞ্জে জামায়াতের প্রীতি সমাবেশ ডেটলাইনের মধ্যে সংস্কার করে নির্বাচন দেন: জামায়াতের সেক্রেটারি শতরূপা ফাউন্ডেশনের চিকিৎসা সহায়তা পেলো, মাদারীপুরের নাছিমা আক্তার। তৃণমূল থেকে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বিএনপি, কর্মীদের প্রত্যক্ষভোটে হচ্ছে কমিটি গঠন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংস্থার ও বিচার কার্যক্রম শেষে জাতীয় নির্বাচন দিতে হবেঃ অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার শতরূপা ফাউন্ডেশনের চিকিৎসা সহায়তা পেলো,ময়মনসিংহের সিদরাতুল মুনতাহা চ্যাম্পিয়ন মির্জাপুর স্পোর্টিং ক্লাব।

শালিকের শরৎবন্ধু

বিচিত্র কুমার
  • প্রকাশিত: বুধবার, ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ১৫৪ বার পড়া হয়েছে
টুনটুন নামে এক শালিক পাখি ছিল। সে ছিল খুবই চঞ্চল আর দুষ্টু। মনের আনন্দে মাঠের এদিক-ওদিক ঘুরে বেড়াত সারাদিন। মাটিতে যেমন পোকা খুঁজত, তেমনি আবার গাছের ডালে বসে আকাশের দিকে তাকিয়ে মুগ্ধ হতো। শরৎকাল এলে, টুনটুনের আনন্দের কোনো সীমা থাকত না। আকাশে সাদা তুলোর মতো মেঘ ভাসত। বাতাসে দুলে উঠত কাশফুল। আর নীল আকাশে কখনো লুকোচুরি খেলত হালকা রোদ। সবমিলিয়ে টুনটুনের মনে হতো, এই পুরো শরৎকাল যেন তার জন্যই এসেছে।
একদিন টুনটুন তার প্রিয় মাঠে উড়ে বেড়াচ্ছিল। হঠাৎ সে খুঁজে পেল এক নতুন বন্ধু। টুনটুনের নতুন বন্ধুর নাম বুড়ুভাই। এই বুড়ুভাই একটি কাকতাড়ুয়া! ধানক্ষেতের মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা কাঠ দিয়ে তৈরি বুড়ুভাইয়ের মাথায় একখানা পুরনো খড়ের টুপি। শরীরে জীর্ণ শার্ট আর হাতে ঝোলানো ছেঁড়া কাপড়ের ঝুলনির মতো হাত। সে কথা বলতে পারে না। হাঁটতেও পারে না বুড়ুভাই। এমনকি নড়তেও পারে না। কিন্তু টুনটুনের তো এসব নিয়ে কোনো চিন্তা নেই! সে নতুন বন্ধুকে নিয়ে বেজায় আনন্দিত। খুশিতে নাচতে লাগল সে।
টুনটুন উড়ে এসে বুড়ুভাইয়ের মাথার টুপিতে বসল আর বলল, ‘এই বুড়ুভাই, তোমার কী মজা! চারপাশে সাদা মেঘ, নীল আকাশ আর কাশফুলের শোভা! তোমার সঙ্গে আমি শরৎ উৎসবে নাচব, ঠিক আছে?’ বুড়ুভাই কথা না বললেও, টুনটুন ভাবল বুড়ুভাই নিশ্চয়ই তার কথা শুনছে। সে বলল, ‘তুমি কথা বলো না, নড়তেও পারো না, তাতে কী! আমি আছি তো! আজ থেকে আমরা শরতের বন্ধু, তুমি আর আমি!’
এরপর থেকেই টুনটুন প্রতিদিন বুড়ুভাইয়ের কাছে আসত। সে তাকে নিয়ে অনেক গল্প করত। আকাশের সাদা মেঘে ভেসে যাওয়ার গল্প, পাতার সুরে নাচের গল্প, কখনো কখনো রোদের আলোয় ঝিলমিল করা নদীর গল্প। টুনটুন উড়ে উড়ে বুড়ুভাইয়ের চারপাশে ঘুরে বেড়াতো আর গান গাইত, ‘শরৎ এসেছে, শরৎ এসেছে, সাদা মেঘের রাজ্যে!’ বুড়ুভাই নড়ত না, তবু মনে হতো, সে টুনটুনের গানে মুগ্ধ হয়ে আছে।

একদিন টুনটুন খেয়াল করল, শরতের বাতাসে কাশফুলের নাচটা একটু বেশি ঝোড়ো হয়ে উঠছে। সে বুড়ুভাইয়ের কাছে এসে বলল, ‘বুঝতে পারছ, বুড়ুভাই? শীত এসে যাচ্ছে। শরৎ শেষ হতে চলেছে, আর আমরা এবার আলাদা হব। শীতে আমি আর তোমার সঙ্গে দেখা করতে পারব না, কারণ তখন ঠান্ডায় আমি অনেক দূরে চলে যাব।’
বুড়ুভাই চুপচাপ থাকল, কারণ সে তো নড়তে পারে না। কিন্তু টুনটুনের মন খারাপ হয়ে গেল। সে বলল, ‘তুমি চিন্তা কোরো না। আমরা আবারও শরতে দেখা করব। যখন আকাশে সাদা মেঘ ভাসবে, যখন কাশফুল বাতাসে নাচবে, আমি ঠিক ফিরে আসব তোমার কাছে। তুমি তো আমার প্রিয় শরৎবন্ধু!’
শীতের আগমনে কাশফুলগুলো শিগগির ঝরে পড়বে। আকাশের সাদা মেঘের ভেলাও খুঁজে নেবে নিজ গন্তব্য। তখন টুনটুনেরও চলে যেতে হবে দূরে কোথাও। কিন্তু টুনটুন ঠিক করে রেখেছে। যাওয়ার আগে সে বলে যাবে, ‘বুড়ুভাই, তুমি অপেক্ষা করো, আমি আবার আসব।’
এভাবে টুনটুনের শরৎবন্ধু বুড়ুভাই ধানক্ষেতে একাই দাঁড়িয়ে থাকল। কিন্তু সে জানত, শরৎ একবার চলে গেলেও তা ফিরে ফিরে আসে। তার প্রিয় বন্ধু টুনটুন কয়েক দিন পর বিদায় নিলেও আবার আসবে শরতের নাচ আর গান নিয়ে।
এই ছিল টুনটুন আর বুড়ুভাইয়ের মধুর শরৎকালীন বন্ধুত্বের গল্প, যেখানে বুড়ুভাই কথা না বললেও, টুনটুন জানত, প্রকৃতির প্রতিটি ধ্বনি আর প্রতিটি অনুভূতি তাদের মধ্যে কথা বলে।

 

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন
© সমস্ত অধিকার সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট