ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানো গণহত্যাকারীদের ইতিহাস কখনো ক্ষমা করবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ও সাবেক সংসদ সদস্য ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের।
তিনি বলেন, স্বৈরাচার আওয়ামী সরকার অট্টহাসি দিয়ে হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে জনগণের রক্ত শোষণের মাধ্যমে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চেয়েছিল। হাসিনা ও তার দোসরেরা সাধারণ মানুষের ওপরে সকল প্রকার মারণাস্ত্র প্রয়োগ করেছে। যুদ্ধের মত করে হেলিকপ্টার থেকে নিজ দেশের নাগরিকদের ওপরে গুলি বর্ষণ করে শিশু অনেককে হত্যা করেছে। তারা ছাত্র-জনতার ওপরে যে নির্মম পৌশাচিক গণহত্যা চালিয়েছে তা কখনো ভুলে যাবার নয়। এই ন্যাক্কারজনক ঘটনা পৃথিবীতে নজিরবিহীন। ইতিহাস তাদের ক্ষমা করবে না।
বুধবার (২১ আগস্ট) বিকেলে দলটির ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের উদ্যোগে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ পরিবারের সদস্যদের সমবেদনা জ্ঞাপন, দোয়া ও আর্থিক অনুদান প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির মো: নূরুল ইসলাম বুলবুলের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির আব্দুস সবুর ফকির, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে মুহাম্মদ কামাল হোসাইন ও ড. আব্দুল মান্নান। ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের কর্মপরিষদ সদস্য ড. মোবারক হোসাইন, হাফিজুর রহমান, জয়নুল আবেদীন, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের মজলিসে শূরা সদস্য আব্দুর রহিম জীবন, যাত্রাবাড়ী দক্ষিণ থানা আমির নওশাদ আলম ফারুক, যাত্রাবাড়ী থানা আমির মাওলানা সাদেক বিল্লাহ. যাত্রাবাড়ী উত্তর থানা আমির মাওলানা জাকির হোসেন, কদমতলী পশ্চিম থানা আমির কবিরুল ইসলাম, কদমতলী দক্ষিণ থানা আমির ইঞ্জিনিয়ার হাবিবুর রহমানসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
ডা. তাহের বলেন, বাংলাদেশের জন্য দুর্ভাগ্য যে, ১৯৭১ সালে আমরা পাকিস্তান থেকে যে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম, আওয়ামী ফ্যাসিস্ট শাসক গোষ্ঠী চরম জুলুম ও অত্যাচার করে সেই অর্জিত স্বাধীনতাকে ম্লান করে দিয়েছিল। এমতাবস্থায় একটি সফল গণ-বিপ্লবের মাধ্যমে এদেশের ছাত্র জনতা দেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করেছে। ২০২৪ সালের জুলাই আগস্টের এ বিজয়কে আমরা দ্বিতীয় প্রজন্মের স্বাধীনতা হিসেবে অভিহিত করতে চাই। এই নতুন বিজয় অর্জনে আমাদের অনেক রক্ত ও জীবন দিতে হয়েছে। দেশ ও জাতিকে মুক্ত করতে ছাত্র-জনতা শাহাদাত বরণ করেছেন। আমরা আজকে যাত্রাবাড়ি এলাকার শহীদ পরিবারের সদস্যদের সাথে মিলিত হয়েছি। আমরা মহান আল্লাহর কাছে সকল শহীদের রূহের মাগফেরাত কামনা করছি এবং আপনাদের সুখ-দুঃখে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে সবসময় পাশে থাকার অঙ্গীকার করছি।
তিনি বলেন, আজকে যাদের আপনজনেরা শহীদ হয়েছে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ হতে আমরা তাদের প্রতি সমবেদনা জানায়। তাদের দু’টি উপাধি এক. আপনারা শহীদের সম্মানিত পরিবার, দুই. আপনাদের শহীদেরা এদেশের বীর সন্তান। দুনিয়ার জন্য তারা জাতীয় বীর এবং পরোকালীন জীবনে তাদের জন্য শাহাদাতের মর্যাদা প্রত্যাশা করি। জাতির মুক্তির সংগ্রামে যারা জীবন দিয়ে গেলেন তারা অবশ্যই সম্মানিত। হত্যাকারীদের বিচারের ব্যাপারে প্রতিটি পরিবার জোর দাবি তুলছে। দেশ ও জাতির অগ্রগতির স্বার্থে অবশ্যই প্রতিটি হত্যাকাণ্ডের বিচার হতে হবে।
নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, মহান আল্লাহর কাছে একজন শহীদ সম্মানিত হন। দেশমাতৃকার মুক্তির জন্য, ফ্যাসিবাদের কবল হতে মুক্তির জন্য, দ্বিতীয় বারে দেশকে স্বাধীন করার জন্য, যারা জীবন দিয়ে গেলেন তাদের জন্য এ দেশবাসী ও রাষ্ট্রের বিরাট দায়িত্ব রয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি রাষ্ট্র এসব বীর শহীদদের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। শহীদদের পরিবার ও তার সন্তানদের লেখাপড়াসহ অন্যান্য বিষয়ে সার্বিক সহযোগিতা রাষ্ট্রের পক্ষ হতে গ্রহণ করা হবে। নতুন রাষ্ট্র বিনির্মাণে এসব আত্ম-উৎসর্গকারীরা আমাদের প্রেরণার উৎস।
এ সময় শহীদ পরিবারের সদস্যদের স্মৃতিচারণে এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয় ও কান্নার রোল পড়ে যায়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি