বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী অতীতেও কখনো প্রতিহিংসার রাজনীতিকে বিশ্বাস করেনি। বর্তমানেও জামায়াতে ইসলামী প্রতিহিংসার রাজনীতি করে না। প্রতিহিংসার রাজনীতিকে জামায়াত পরিহার করেছে।’
বুধবার (২১ আগস্ট) বেলা সাড়ে ১১টায় চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার একটি কমিউনিটি সেন্টারের আয়োজিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন
আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান উপস্থিত হাজার হাজার জনতার উদ্দেশ্যে বলেন, ‘মহান আল্লাহ তার অসীম দয়ায় বাংলাদেশের মানুষকে জালিমের জুলুম থেকে মুক্ত করেছেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে যারা জীবন দিয়েছেন তাদেরকে মহান আল্লাহ যেন শহীদ হিসেবে কবুল করেন এবং যারা আহত হয়েছেন তাদেরকে যেন আল্লাহ সুস্থ করে দেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যারা করেছেন তাদের সবাইকে মহান আল্লাহ যেন দুনিয়া ও আখিরাতে সম্মানিত করেন। তাদের এই আত্মত্যাগের বিনিময়ে যেন বাংলাদেশে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ইনসাফ-ভিত্তিক সমাজ-রাষ্ট্র ও রাষ্ট্রব্যবস্থা পরিচালিত হয়।’
চাঁদাবাজি, দখলদারি, লুটতরাজ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘সাড়ে ১৫ বছর আওয়ামী লীগ যা করল, পট পরিবর্তনের সাথে সাথে যারা একই কাজ করেছে- তারা আওয়ামী লীগের মতোই। আমরা এদেরকে ভিন্নভাবে দেখি না। আমরা অনুরোধ করব, এগুলো বন্ধ করেন।’
আমিরে জামায়াত বলেন, ‘২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর লগি-বইঠা নিয়ে আমাদের ছয় ভাইকে শহীদ করে এদেশে হত্যা রাজনীতি শুরু করে। পরে ক্ষমতায় এসে ২০০৯ সালে বিডিআর সদর দফতর পিলখানায় দেশপ্রেমিক সেনা অফিসারদের হত্যার মাধ্যমে খুনের রাজনীতির মাধ্যমে খুনের রাজনীতিকে চূড়ান্তভাবে রূপ দেয়। আওয়ামী লীগ প্রায় সাড়ে ১৫ বছর বাংলার মসনদে ছিল। বাংলার আপামর জনগণ ঘৃণা করে তাদের কখনো ভোট দেয়নি। ২০১৪ সালে ভোটবর্জন, ২০১৮ সালে ভোট প্রত্যাখান এবং ২০২৪ সালে প্রতিরোধ করেছে। এরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত না হওয়ার কারণে জনগণের প্রতি তাদের কোনো দয়া-মায়া ছিল না।’
তিনি আরো বলেন, ‘আপনাদের স্মরণ থাকার কথা, আমাদের কলিজার টুকরো নেতাকর্মীদের যুদ্ধাপরাধীর বলে খুন করেছে। আল্লাহ তায়ালা বিচার আমাদের চোখের সামনে দেখিয়ে দিয়েছেন। আমাদের কোনো দায়িত্বশীল দেশ থেকে পালায়নি।’
তিনি বলেন, ‘আত্মহত্যা হারাম, তার চাইতেও জঘন্য হচ্ছে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া।’
সংক্ষিপ্ত সভায় তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে বোয়ালখালীর শহিদ মো: ওমরের বাবা নুরুল আবছারকে জড়িয়ে ধরে সমবেদনা জানান।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে আরো উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম মহানগর আমিরে জামায়াত সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী, উপজেলা আমির ডা. খোরশেদ, নায়েবে আমির ডা. নাছের, সাধারণ সম্পাদক মো: ইমাম উদ্দিন ইয়াছিন, জামায়াত নেতা সাইদুল আলম, রফিকুল ইসলাম খসরু, মো: নাজিম উদ্দিন, উপজেলা শিবির সভাপতি মো: ওয়াহিদুর রহমান অয়ন, মো: পারভেজ প্রমুখ।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশের পরে আমিরে জামায়াত লোহাগাড়া উপজেলার উদ্দেশে বোয়ালখালী থেকে রওনা হন।