প্রিন্ট এর তারিখঃ এপ্রিল ১৯, ২০২৫, ১১:৪২ পি.এম || প্রকাশের তারিখঃ জুলাই ৬, ২০২৪, ৯:৪৬ এ.এম
নাঙ্গলকোটের পরিত্যাক্ত গোহারুয়া ২০শষ্যা হাসপাতাল পরিদর্শন
হাসপাতালটির সংস্কার প্রকল্প প্রস্তাব পাস হলে লক্ষাধিক জনগণ স্বাস্থ্য সেবায় আলোর মুখ দেখবে কুমিল্লা সিভিল সার্জনের নাঙ্গলকোটের পরিত্যাক্ত গোহারুয়া ২০শষ্যা হাসপাতাল পরিদর্শন নাঙ্গলকোটের পরিত্যাক্ত গোহারুয়া ২০শষ্যা হাসপাতাল বুধবার সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন, কুমিল্লা জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ নাসিমা আক্তার। এসময় উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ দেব দাস দেব, আদর্শ সদর স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আহমেদ সামি, কুমিল্লা স্বাস্থ্য ও প্রকৌশল বিভাগের সহকারি প্রকৌশলী সাইফুল ইসলাম প্রমুখ। এসময় জেলা সিভিল সার্জন ২০ শষ্যা হাসপাতালটির পরিত্যাক্ত মূল ভবন এবং বিভিন্ন আবাসিক ভবন পরিদর্শন করেন। জানা যায়, উপজেলা জোড্ডা পশ্চিম ইউনিয়নের গোহারুয়ায় পরিত্যাক্ত ২০শষ্যা হাসপাতালটিতে বর্তমানে বহিঃবিভাগ স্বাস্থ্য সেবার মাধ্যমে ইপিআই কার্যক্রম, ভিটামিন এপ্লাস ক্যাম্পেইনসহ প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা চালু রয়েছে। অন্তঃবিভাগ ও জরুরী বিভাগ বন্ধ রয়েছে। নাঙ্গলকোট উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ দেব দাস দেব দীর্ঘদিন থেকে পরিত্যাক্ত থাকা গোহারুয়া ২০শষ্যা হাসপাতালটিতে পূর্ণাঙ্গ স্বাস্থ্য সেবা চালু করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন। তিনি হাসপাতালটির মূল ভবন, আবাসিক ভবন সংস্কার এবং সীমানা প্রাচীর নির্মাণের জন্য জেলা সিভিল সার্জন এবং জেলা স্বাস্থ্য ও প্রকৌশল বিভাগের সহকারী প্রকৌশলীসহ হাসপাতালটি সরেজমিনে পরিদর্শন করেন। তারা হাসপাতালটি সরেজমিনে পরিদর্শনের মাধ্যমে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে হাসপাতালটির মূল ভবন ও আবাসিক ভবনগুলোর দরজা-জানালা সংস্কার, বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম স্থাপন, ভবনগুলোর মেরামত ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণসহ আনুসাঙ্গিক বিভিন্ন সংস্কার নিয়ে একটি প্রকল্প প্রস্তাব স্বাস্থ্য ও প্রকৌশল অধিদপ্তরে প্রেরণ করবেন। জানা যায়, ২০০৫ সালে তৎকালীন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী আমান উল্ল্যা আমান ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আবদুল গফুর ভূঁইয়া নাঙ্গলকোট, পাশ্ববর্তী মনোহরগঞ্জ এবং সেনবাগ উপজেলার প্রায় লক্ষাধিক জনগণের স্বাস্থ্য সেবার জন্য প্রায় ৫কোটি টাকা ব্যয়ে ২০শষ্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটি নির্মাণ করেন। ওই সময়ে স্বাস্থ্য সেবার প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম ছাড়াই হাসপাতালটি উদ্বোধন করা হয়। এছাড়া হাসপতালটির চতুর্দিকের সীমানা প্রাচীর নির্মান না করায় হাসপাতালটি একেবারে অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে থাকে। ফলে কিছুদিন পর হাসপাতালটিতে স্বাস্থ্যসেবা বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে হাসপাতালটিতে মাদকসেবীদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়। চোরেরদল হাসপতালটির দরজা-জানালা এবং বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম চুরি করে নিয়ে যায়। হাসপাতাটির মূল ভবনসহ আবাসিক ভবনগুলোর পরিত্যাক্ত হয়ে লতাগুল্মের জন্ম হয়।এছাড়া হাসপাতালটি সামনের দু‘টি জলাশয়ে এলাকার প্রভাবশালীরা মাছ চাষ করেন। তারা হাসপাতালের একটি ভবনকে মাছের খাবারের গোডাউন হিসেবেও ব্যবহার করেন। স্থানীয় এক মানসিক প্রতিবন্ধী হাসপাতালের একটি পরিত্যাক্ত আবাসিক ভবনে আবাসন গড়ে তোলেন। পরে ২০১৭ সালে তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালসহ স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের উধ্বর্তন কর্মকর্তাবৃন্দ হাসপাতালটি সরেজমিনে পরিদর্শন করে আবারো বহিঃবিভাগের স্বাস্থ্য সেবা চালু করেন। ২০১৭ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত খুঁড়িয়ে-খুঁড়িয়ে হাসপাতালটিতে বহিঃবিভাগের স্বাস্থ্যসেবা চালু রয়েছে। স্থানীয় রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্ব ও সাংস্কৃতিক কর্মী এনাম ভূঁইয়া বলেন, উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ দেব দাস দেব হাসপাতালটির সংস্কারের যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। আমি ওনাকে সাধুবাদ জানাচ্ছি। স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের মাধ্যমে হাসপাতালটির সংস্কার প্রস্তাব পাস হলে হাসপাতালটি সাংস্কারের মাধ্যমে অন্তঃবিভাগ ও জরুরী বিভাগ চালুর মাধ্যমে তিনটি উপজেলার লক্ষাধিক জনগণ স্বাস্থ্যসেবায় আলোর মুখ দেখবেন ।
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত