সিরাজগঞ্জের তাড়াশে শ্রেণিকক্ষে ঘুমানোর প্রতিবাদ করায় সহোদর দুই শিক্ষকের মারপিটে সুশীল কুমার মাহাতো নামের এক শিক্ষক আহত হয়েছে। আহত শিক্ষককে প্রথমে তাড়াশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পরে তাড়াশ জিকেএস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
রবিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাড়াশ উপজেলার বিষমডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় শিক্ষা অফিসের পাশাপাশি থানায় অভিযোগ দেয়া হয়েছে।
শিক্ষক সুশীল কুমার মাহাতো জানান, ১৯৮৯ সালে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হবার পর সহকারী শিক্ষক হিসেবে দেবেন্দ্র কুমার এবং ২০১৬ সালে তার ভাই বিশ্বনাথ মাহাতো সহকারী শিক্ষক হিসেবে যোগদান করেন। যোগদানের পর থেকেই দুই ভাই ক্লাস না নিয়ে ক্লাসে গিয়ে ঘুমান। এতে পড়াশোনার চরম ব্যাঘাত ঘটে। বিষয়গুলো নিয়ে ঘুমানোর ছবিসহ বারবার অভিযোগসহ প্রতিবাদ করা হয়েছে। সম্প্রতি একটি ছবি ফেসবুকে প্রকাশ পায়। এ অবস্থায় শনিবার প্রথম ক্লাস শেষে লাইব্রেরী রুমে বসে থাকাবস্থায় দুই ভাই অতর্কিতভাবে হামলা চালিয়ে মারপিট করে আহত করে। বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা অফিসে অভিযোগ দেয়া হয়েছে এবং চিকিৎসা শেষে থানায় লিখিত অভিযোগ দেয়া হবে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নৃপেন্দ্রনাথ মাহাতো বলেন, শিক্ষক সুশীল কুমার মাহাতোর শার্টের কলার ধরে সহকারী শিক্ষক দেবেন্দ্র কুমার মাহাতো ও তার ভাই বিশ্বনাথ মাহাতো কিল ঘুষি মেরেছে। অপর শিক্ষক প্রবীণ কুমার মাহাতো বলেন, শিক্ষক হয়ে আরেকজন শিক্ষকের গায়ে হাত তোলা উচিত হয়নি। দুই শিক্ষকের এমন কান্ডে ক্লাস করা বাদ দিয়ে অধিকাংশ শিক্ষার্থী ভয়ে বিদ্যালয় থেকে বাড়িতে চলে যায়।
আর অভিযুক্ত সহোদর দুই শিক্ষক দেবেন্দ্র কুমার মাহাতো ও বিশ্বনাথ মাহাতো বলেন, ঘুমিয়ে পড়া আমাদের একটা রোগ হয়েছে। এ জন্য আমরা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসককে দেখিয়েছি। নিয়মিত ওষুধ খাচ্ছি। আগের থেকে ঘুম একটু কমেছে। মারধরের বিষয়ে বিশ্বনাথ মাহাতো বলেন, আমার ভাই দেবেন্দ্র কুমার মাহাতো টেবিলে মাথা রেখে ঘুমিয়ে পড়েন। সহকারী শিক্ষক সুশীল কুমার মাহাতো মোবাইল ফোনে সেই ছবি তোলেন। এতে আমার রাগ হয়। এ জন্য তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে মারধরের ঘটনা ঘটে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মুসাব্বির হোসেন খান বলেন, সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মনিরুজ্জামানকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছিল। মারধরের শিকার সহকারী শিক্ষক সুশীল কুমার মাহাতোকে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা অফিসের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন এবং তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
তাড়াশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলাম বলেন, মৌখিকভাবে মারধরের বিষয়ে জেনেছি। লিখিত অভিযোগ দিতে বলা হয়েছে। অভিযোগ পেলেই আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।